করোনায়ও সফল ইউশরার ভাগাভাগির কার্যালয় বাণিজ্য
1 min read
১৯ নভেম্বর ছিল আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা দিবস। উদ্যোক্তা হওয়ার যাত্রায় পিছিয়ে নেই এ দেশের নারীরাও। বিশেষ করে প্রযুক্তির কল্যাণে অনেক নারীই এখন ঘরে বসে উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। নিজে কিছু করার স্বপ্ন থেকে কেউ যুক্ত হয়েছেন রন্ধনশিল্পের সঙ্গে। নানা পদের রান্নার রেসিপি দিয়ে আয় করছেন ঘরে বসে। আবার বিদেশের অভিজ্ঞতায় কেউ গড়ে তুলেছেন ভাগাভাগির অফিস বা কার্যালয় ব্যবসা। কেউ তৈরি করেছেন প্রশিক্ষণকেন্দ্র। আবার ঘরে বসেই মসলার জনপ্রিয় ব্র্যান্ডও তৈরি করে ফেলেছেন একজন। চার নারীর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প নিয়ে এবারের আয়োজন।
মা-বাবার তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট ইউশরা নাশমিন। বড় দুই ভাই–বোনের মতো নিজেও উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান অস্ট্রেলিয়ায়। পড়াশোনা শেষে সে দেশে থিতু না হয়ে ফিরে আসেন দেশে। পরিবারের পাশে থাকার জন্য। সঙ্গে ছিল নিজে কিছু করার জেদ। ইউশরা নাশমিনের বাবা ব্যবসায়ী। তাই শুরুতে দেশে ফিরে বাবাকে ব্যবসায় সাহায্য করতে শুরু করেন; পাশাপাশি নিজে কিছু করার স্বপ্নের বাস্তবায়নে মাঠে নামানোর প্রস্তুতি নিতে থাকেন।
ইউশরার বাবার অফিসে নানা ধরনের মানুষ আসতেন। এত এত মানুষের ভিড়ে একদল স্বপ্নবাজ মানুষের সন্ধান পান তিনি। ইউশরা লক্ষ করেন, এসব মানুষের আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন, যাঁরা নিজেরা কিছু করতে চান। ইউশরা জানেন, অনেক দূরের যাত্রা শুরু করতে হয় বাসা থেকে এক কদম ফেলে। যেকোনো ছোট উদ্যোগ আইনগতভাবে শুরু করতে হলে আগে ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানি গঠন এবং ব্যাংক হিসাব থাকা আবশ্যক। আর এ সবকিছুর জন্য বাণিজ্যিক ঠিকানা দরকার, যা ছোট উদ্যোক্তাদের জন্য বেশ ব্যয়বহুল। অনেক তরুণ উদ্যোক্তারই উদ্যোগ শুরুর জন্য টিম তৈরি করে কাজে নামা বা সম্ভাব্য ক্রেতাদের সঙ্গে সভা করার একটা সুসজ্জিত কার্যালয় করার সামর্থ্য থাকে না। ইউশরার মনে পড়ে যায়, অস্ট্রেলিয়াতে তিনি ও তাঁর স্বামী স্টার্টআপ শুরু করতে গিয়ে এ ধরনের সমস্যায় পড়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়াতে তাঁদের সেই সমস্যার সমাধান হয়েছিল ভাগাভাগির একটি স্থানে (কো–ওয়ার্কিং স্পেস)।
বিজ্ঞাপন
ঢাকায় কয়েকটা ভাগাভাগির বা ভাড়াভিত্তিক কার্যালয়ের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলেও ধারণাটি এখনো খুব জনপ্রিয়তা পায়নি। ইউশরা খোঁজ নিয়ে জানলেন, তাঁর নিজের এলাকা উত্তরায় এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। তাই ২০১৯ সালে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের জসীমউদ্দীন অ্যাভিনিউর উত্তরা টাওয়ারের পঞ্চম তলায় তিন হাজার বর্গফুট জায়গা নিলেন তিনি। ট্রেড লাইসেন্স করলেন ‘ওয়ার্কস্টেশন ১০১’ নামে। শুরু করলেন অফিস বা কার্যালয় সাজানোর কাজ। উদ্দেশ্য, নতুন উদ্যোক্তা ও ঘুরে ঘুরে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের জন্য ইন্টারনেট, চা-কফি, ক্লান্তি দূর করা, খেলার আয়োজনসহ নানা সুযোগ-সুবিধাসংবলিত বসার স্থানের ব্যবস্থা করা। সাজসজ্জার কাজ চলা অবস্থাতেই ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম গ্রাহক পেয়ে গেলেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলেন ‘ওয়ার্কস্টেশন ১০১’-এর কাজ।